শরীরে আয়রনের ঘাটতি: বুঝবেন কীভাবে?


sharethis sharing button

আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষের শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়। তবে নারীদের এই সমস্যা বেশি হয়। প্রতিমাসে পিরিয়ডের কারণে নারীদের দেহে কিছুটা আয়রন ঘাটতি হয়। খাবারের মাধ্যমে পূরণ করতে না পারলে এই ঘাটতি থেকেই যায়।বিজ্ঞাপন

শাক-সবজি, ছোলা, কলিজা, কুমড়ো বিচি, ডাল, পালং শাক, কচু শাক, আপেল, খেজুর, বাদাম, সয়াবিন ও সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলো রাখতে হবে।

শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আয়রন। হিমোগ্লোবিন শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। আয়রনের অভাবে হিমোগ্লোবিন কমে যায়, ফলে রক্তস্বল্পতাসহ নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।বিজ্ঞাপন

কীভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে কী না? আসুন জেনে নেই শরীরে আয়রন ঘাটতির লক্ষণগুলো সম্পর্কে-

বুকে ব্যথা

এই সমস্যাটি আয়রন ঘাটতির অন্যতম বড় লক্ষণ। রক্তে অক্সিজেন কমে গেলে মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া অস্বাভাবিক হয়ে যায়। ফলে হৃদযন্ত্রের কাজও ব্যাহত হয়। তখন বুকে ব্যথা হয় ও নিঃশ্বাসে সমস্যা হয়।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি: বুঝবেন কীভাবে?

অতিরিক্ত ক্লান্তি

কাজ করলে ক্লান্তি আসবে- এটাই স্বাভাবিক। তবে অল্প কাজ করেই অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া মোটেই স্বাভাবিক ব্যাপার না। শরীরে আয়রন ঘাটতির একটি সাধারণ লক্ষণ হলো অতিরিক্ত ক্লান্ত হওয়া। আয়রনের অভাব হলে শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে যায়। হিমোগ্লোবিন রক্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। ফলে এর অভাবে স্বাভাবিক কাজ করার ক্ষমতা কমে যায়। একারণে শরীরে ক্লান্তি অনুভূত হয়।

পায়ের ভারসাম্যহীনতা

ডোপামিন হরমোনকে বলা হয় ‘মাধ্যম’, যা মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। আয়রনের ঘাটতি থাকলে শরীরে ডোপামিন হরমোন নিঃসরণ কম হয়। ফলে হাঁটার সময় শরীরে ভারসাম্য বা নিয়ন্ত্রণ থাকে না। পায়ের ভারসাম্যহীনতা সাধারণত বিকেল ও রাতে অনুভূত হয়।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি: বুঝবেন কীভাবে?

ফ্যাকাশে ত্বক

শরীরের লাল রক্ত কণিকাকে হিমোগ্লোবিন বলা হয়। ত্বক সজীব ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে হিমোগ্লোবিন। আয়রনের ঘাটতি থাকলে শরীরে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন উৎপন্ন হয় না। ফলে ত্বক ফ্যাকাশে ও বিবর্ণ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, আয়রনের অভাবে নখ, চোখের পাতা ও দাঁতের মাড়ি অত্যন্ত ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।

মাথাব্যথা

আয়রনের অভাবে তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। মস্তিষ্কে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহের প্রয়োজন তা না হলে মাথাব্যথা হয়। এছাড়া হিমোগ্লোবিনের অভাবে রক্তচাপের মাত্রা কমে যেতে পারে। ফলে ঘন ঘন মাথাব্যথা হতে পারে।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি: বুঝবেন কীভাবে?

চুল পড়া

অতিরিক্ত চুল পড়া, চুলের গোড়া নরম হয়ে যাওয়া, রুক্ষতা ও চুল ফেটে যাওয়া আয়রন ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। আয়রণের অভাবে দেহে রক্তস্বল্পতা হয়। এতে চুলের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। দিনে ৫০-৬০টি চুল পড়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এর বেশি চুল পড়লে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

জিহ্বার রং পরিবর্তন

আয়রনের অভাবে জিহ্বার রং ফ্যাকাশে হয়ে যায়। মায়োগ্লোবিন এক ধরনের আয়রন এবং অক্সিজেন দ্বারা যুক্ত প্রোটিন। শরীরে মায়োগ্লোবিনের নিঃসরণ কম হলে জিহ্বার রং ও আকার পরিবর্তন হয়ে যায়। জিহ্বায় কালশিটে পরে ও দানা ওঠে। মুখে শুষ্কভাব অনুভব করাও আয়রন ঘাটতির একটি লক্ষণ।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি: বুঝবেন কীভাবে?

বুক ধড়ফড় করা

শরীরে আয়রন ঘাটতির আরেকটি লক্ষণ হলো বুক ধড়ফড় করা। হিমোগ্লোবিনের অভাবে হৃদযন্ত্রে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ হয় না। ফলে হৃদস্পন্দন কখনো বাড়তে ও কখনো কমে যেতে পারে। হৃদযন্ত্রের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

তলপেটে ব্যথা ও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত

দেহে আয়রনের ঘাটতি থাকলে অনেকের প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত ও তল তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ব্যায়াম করা উচিত না। এতে সমস্যা আরো বাড়তে পারে।

শরীরে আয়রনের ঘাটতি: বুঝবেন কীভাবে?

শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য দেহের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হলো আয়রন। শরীরে আয়রন ঘাটতির লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর চিকিৎসকই জানাবেন আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি আছে কী না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া উচিত না। প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণে আয়রনজাতীয় খাবার খেতে হবে তা আপনার চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন।


গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বছরের পর বছর খাওয়া কি ঠিক?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

My Cart
Close Wishlist
Close Recently Viewed
Compare Products (0 Products)
Compare Product
Compare Product
Compare Product
Compare Product
Categories